শার্শায় একধিক অপকর্মের হোতা ভুমি দস্যু সাবেক এমপি আফিল আপনি কোথায়?
বেনাপোল প্রতিনিধি:
শার্শার একক আধিপত্য বিস্তার দমন, পিড়ন, নির্যাতন, অন্যায়, অত্যাচার, মামলা, হামলা যখন তখন যাকে তাকে মারধর এবং তার কথা ছিল শেষ কথা সেই সাবেক আফিল উদ্দিন এর সাম্রজ্যের পতন শুরু হয়েছে। এরই মাঝে জোর জবরদ্বস্তি এবং লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে দখল করা ৪১.৯৬ একর জমি শার্শা উপজেলা প্রশাসন দখল মুক্ত করেছে। তিনি বিভিন্ন মঞ্চে বক্তব্য দিতে উঠে আগে নিজেক সৎ নেতা দাবি করতেন। এই সৎ নেতা আপনি কোথায় জানতে চেয়েছেন শার্শার জনগন।২০০৯ সালে শেখ আফিল উদ্দিন শার্শার এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর খড়ক নেমে আসে বিরোধী শিবিরে। এমনকি ত্যাগি আওয়ামীলীগ নেতা কর্মীদেরও তিনি মুল্যায়ন না করে তাদের উপর চালায় অত্যাচার নির্যাতন। তার নির্যাতন এর হাত থেকে রেহাই পায়নি শার্শা থানার তৎকালীন ওসি এনামুল হক। ঘটনাটি ঘটে ২০১০ সালের ১৬ আগষ্ট।
এ ভাবে আফিল উদ্দিন এর পরোক্ষ প্রত্যক্ষ ইন্ধনে গত ১৫ বছরে অত্যাচার নির্যাতনে নিজ দলীয় নেতা কর্মী, বিএনপির কর্মী সমর্থক সহ প্রায় কয়েক ডজন হত্যা হয়। আর এসব হত্যা মামলার পর ভুক্তভোগির পরিবারকে হুমকি ধামকি দিয়ে মামলা প্রত্যাহার করা হয়। এভাবে সে মহাদাপটের সাথে হাওড় বাওড় দখল করে শার্শায় বিগত ১৫ টি বছর ত্রাসের রাজনীতি চালিয়েছে।
গত ৫ আগষ্টে শাসক গোষ্টির পতনের পর আফিল উদ্দিন রয়েছে পলাতক। তবে শার্শায় স্বস্তির নিশ্বাস বইছে বিগত দেড় যুগ পর। আফিল উদ্দিন খুন খারাপি ইন্ধন যোগানোর পাশাপাশি জমি দখল করেছে শার্শার একাধিক বিলের। সম্প্রতি শার্শা উপজেলা প্রশাসন ১৫০ টি বাশের খুটি ও লাল পতাকা দিয়ে সীমানা নির্ধারন করে উদ্ধার করেছে প্রায় ৪২ একর জমি।
স্থানীয়রা জানায় বিগত সাড়ে ১৫ বছরে সাবেক এমপি আফিল উদ্দিন নিয়োগ বানিজ্য, জমি দখল,সরকারী প্রকল্পের অর্থ আত্নসাৎ, টেন্ডার বানিজ্য আর সন্ত্রাসী বাহিনী লালন করে অবৈধ সম্পদ শুধু বাড়িয়েই গেছেন। আর এসব অপকর্মে বাধা হয়ে দাঁড়ালেই তার নির্দেশে বা ইশারায় খুন করা হয়েছে। শেখ আফিল এর অবৈধ টাকায় ঢাকা যশোর ও শার্শায় রয়েছে একাধিক বাড়ি। এছাড়া স্ত্রী ছেলে এবং নিজ নামে দেশে বিদেশে গড়েছেন সম্পদের পাহাড়।
একক আধিপত্য এবং বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা নিয়ন্ত্রনের জন্য তিনি শার্শায় গড়ে তোলেন ভয়ংকর সন্ত্রাসী বাহিনী। বিশেষ সুত্রে জানা গেছে তার নির্দেশে ২০০৯ সালের ১০ মার্চ শার্শার বাগআঁচড়া বাজারে বাড়ির ছাদে খুন হন সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম বাবু। ২০১০ সালের ১৬ আগষ্ট লক্ষনপুর ইউনিয়ন যুবদলের সদস্য আব্দুল হামিদকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এই ঘটনায় থানায় মামলা নেওয়ার ঘটনায় শার্শা থানার ওসি এনামুল হককে এমপি আফিল তার জুট মিলের মধ্যে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করেন।২০১২ সালের ১৫ জুন শার্শার দৈনিক গ্রামের কাগজ এর সাংবাদিক জামাল উদ্দিনকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। এঘটনায় শার্শা থানায় মামলা হলেও বিচার হয়নি। ২০১৩ সালে শার্শা উপজেলার পুটখালী ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল রাজ্জাককে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ২০১৫ সালে যুবলীগের কর্মী তোজাম্মেল হোসেনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যা মামলায় শার্শা উপজেলার তৎকালীন ছাত্রলীগের সভাপতি আবদুর রহিম সরদারকে প্রধান আসামি করা হয়। এই রহিম সরদার এমপি আফিল উদ্দিন এর ঘনিষ্ট অনুসারী।
এছাড়া অবৈধ ভাবে জমির মাটি কেটে এলাকায় একক ভাবে অটো ব্রিকস এর ব্যবসা করেছেন এমপি আফিল উদ্দিন। এছড়া জমি দখল করে শত শত বিঘা জমির মাটি কেটে মাছের ঘেরে পরিনত করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নাভারন এলাকার একজন ব্যক্তি বলেন শার্শায় তিনি অবৈধ ভাবে ৩০০ বিঘা জমি দখল করেছেন। এর মধ্যে তার ১১০ বিঘার উপর গড়ে তোলা আফিল জুট উইভিং মিলসের প্রায় ৫০ বিঘা গরিব মানুষদের কাছ থেকে দখল করা।
এছাড়া তার দখল ও টেন্ডার এবং লুটপাটের তদারকি করত বিভিন্ন ইউনিয়ন এর লাঠিয়াল বাহিনী।
এ বিষয় জানার জন্য শেখ আফিল উদ্দিন এর মোবাইল ফোনে কয়েকবার ফোন দিলেও তার ফোন বন্ধ ছিল । উল্লেখ্য গত ৫ আগষ্ট এর পর থেকে সে পলাতক রয়েছে বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে।
Post a Comment