বেনাপোল কলেজ এর কমিটি নিয়ে শিক্ষককে লাঞ্চিত ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে বোমাবাজি
জি এম আশরাফ (বেনাপোল),যশোর
বেনাপোল ডিগ্রি কলেজের সভাপতি পদ নিয়ে বাংলাদেশ জাতিয়তাবাদি দল (বিএনপি)’র দুই গ্রুপের অভ্যান্তরিন কোন্দলের কারনে কলেজের অধ্যক্ষকে লঞ্চিত, গালিগালাজ করা এবং জোর করে আবেদনে ফরোয়ার্ডিং করে নেওয়া ও বাজারে শান্তি পুর্ণ মিছিলে হামলা ও বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছে। রোববার (২০ অক্টোবর) বেলা ১ টার সময় এ ঘটনা ঘটে। শার্শা উপজেলায় বিএনপির দুইটি গ্রুপ রয়েছে এর একটি সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক বিএনপির কেন্দ্রিয় তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক মফিুকল হাসান তৃপ্তির অনুসারি ও আর একটি কেন্দ্রিয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি নুরুজ্জামান লিটন এর অনুসারি।
বেনাপোল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ কামরুজ্জামান বলেন, সরকার পতনের পর পর আমাদের পুর্বের এডাপ কমিটি বিলুপ্তি করে দেয় জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয়। এবং অস্থায়ি ভাবে সভাপতির দায়িত্ব পালন করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার। এরপর নতুন কমিটির জন্য জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয় সভাপতি ও উৎসাহী ব্যক্তিদের তিনজন করে নাম পাঠাতে বলে। আমরা কলেজের সকল শিক্ষক বসে আরও একটি টিম গঠন করি। এবং আমাদের যে সব লোকজন কলেজের প্রতিনিধিত্ব করেন তারা কলেজে আসে এবং নতুন সভাপতি কাকে নেওয়া যায় আলোচনা হয়। তারা সকলে বাংলাদেশ জাতিয়তাবদি কেন্দ্রিয় যুবদলের সাবেক সহসভাপতি নুরুজ্জামান লিটন এর নাম উত্থাপন করে। এর কয়েকদিন পর অর্থাৎ চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে নুরুজ্জামান লিটন কে সভাপতি প্রার্থী হিসাবে তার লোকজন একটি ফরোয়ার্ডিং নিয়ে যায় কলেজ থেকে। এর কয়েকদিন পর বেনাপোল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মিলন, পৌর বিএনপির সভাপতি নাজিম উদ্দিন ও সাহাবুদ্দিন আহমেদ কলেজে আসে এবং লিটনকে বাদ দিয়ে নতুন কাউকে সভাপতি করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। তবে তারা ওই সময় কারো নাম দিতে পারে নাই। এরপর মিলন বার বার তাকে ফোন করে লিটনকে বাদ দিয়ে অন্য নাম দিয়ে ফরোয়ার্ডিং করতে বলে। আজ তার নেতৃত্বে কয়েকজন এসে আমাকে শার্শা উপজেলা বিএনপি সভাপতি খায়রুজ্জামান মধুর আবেদন ফরোয়ার্ডিং করে জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয় পাঠাতে বলে। আমি তাদের বুঝাতে চেষ্টা করি একবার কারো নাম দিলে দ্বিতীয়বার আর দেওয়া যায় না। এসময় মিলন উত্তেজিত হয়ে আমাকে হাত দিয়ে অন্যান্য শিক্ষকের সামনে মারতে যায় এবং গালিগালাজ করে। এরপর জোর পুর্বক সে আমাকে প্রান নাশের এবং চাকুরি খেয়ে নেওয়ার হুমকি দিয়ে খায়রুজ্জামান মধুর পক্ষে ফরোয়ার্ডিং করে নিয়ে যায়।
বেনাপোল বাজারের প্রত্যক্ষদর্শীরা বলে একটি মিছিল যাওয়ার সময় অন্য একটি গ্রুপ এসে তাদের ধাওয়া করে। এবং পর পর ৩/৪ টি বোমা বিস্ফোরন ঘটায়। বোমা বিস্ফোরন ও লাঠি সোঠার ভয়ে বাজারের ব্যবসায়িরা দিকবিদিক ছুটাছুটি করে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে।
এ বিষয়ে বেনাপোল পৌর বিএনপির সাধারন সম্পাদক আবু তাহের ভারত বলেন, প্রায় একমাস পুর্বে বেনাপোল কলেজের সভাপতি পদের জন্য জাতিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নুরুজ্জামান লিটন এর আবেদন কলেজ অধ্যক্ষ ফরোয়ার্ড করে। এরপর বার বার বিএনপির মফিকুল হাসান তৃপ্তির কিছু অনুসারি সাবেক বেনাপোল ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান মাসুদুর রহমান মিলন এর নেতৃত্বে খায়রুজ্জামান মধুকে সভাপতি করার জন্য আবেদন ফরোয়ার্ড করতে বলে অধ্যক্ষকে। আজ ওই গ্রুপটি জোর পুর্বক কলেজ অধ্যক্ষর নিকট থেকে আবেদনে স্বাক্ষর করিয়ে নেয়। এবং অধ্যক্ষকে মারধর করতে যায়। এরপর নুরুজ্জামান লিটন এর একটি শান্তিপুর্ণ মিছিলে মফিকুল হাসান তৃপ্তির অনুসারিরা হামলা করে ও বাজারে কয়েকটি বোমা বিস্ফোরন ঘটায়।
এ বিষয় বেনাপোল পোর্ট থানার ওসি রাছেল মিয়া বলেন, তারা সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিল। তবে কেউ মামলা করেনি। মামলা করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। তবে আপাতত পরিবেশ স্বাভাবিক আছে।
Post a Comment