দীর্ঘদিনের জল্পনা কল্পনা শেষে পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হবে আজ
আজ ০৭ সেপ্টেম্বর ( বৃহস্পতিবার) পদ্মাসেতু হয়ে ঢাকা-ভাঙ্গা রুটে পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচল শুরু হচ্ছে । রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে ট্রেনটি পদ্মাসেতু পার হয়ে ছুটবে ভাঙ্গা রেলস্টেশনে। আর ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হবে আগামী ১০ অক্টোবর।
এ বছর চালু হবে ফরিদপুরের ভাঙ্গা জংশন পর্যন্ত। আর যশোর পর্যন্ত পুরো প্রকল্প উদ্বোধন হবে ২০২৪ সালের জুনে। পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে যশোর পর্যন্ত প্রায় ১৭২ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেলপথ নির্মাণ করছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর মধ্যে ঢাকা থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার রেলপথ চালু হচ্ছে।
আগামী বছর জুনে যশোর পর্যন্ত রেল চালুর লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের এক সপ্তাহ পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চলাচল শুরু হতে পারে। শুরুতে একটি ট্রেন পরিচালনা করা হবে। প্রকল্প কার্যালয় থেকে ঢাকা-পদ্মাসেতু-রাজবাড়ী রুটে ট্রেন চালানোর প্রস্তাব করা হয়েছে। অন্যদিকে রাজশাহী থেকে ঢাকা পর্যন্ত একটি ট্রেন চালানোর প্রস্তাব রয়েছে। মধুমতি এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভাঙ্গা পর্যন্ত আসে। এ ট্রেন ঢাকা পর্যন্ত আনা হতে পারে। পদ্মাসেতু রেল সংযোগ প্রকল্পের অধীনে চীন থেকে ১০০ নতুন কোচও কেনা হয়েছে। নতুন কোচ দিয়েই ট্রেন চালু করা হবে। রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুরুতে তিনটি স্টেশনে ট্রেন থামার ব্যবস্থা থাকবে। স্টেশনগুলো হচ্ছে- মাওয়া, পদ্মা (জাজিরা) ও শিবচর। মুন্সিগঞ্জের নিমতলা স্টেশনটিও চালুর চেষ্টা চলছে।
প্রকল্পের প্রতিবেদন অনুসারে, আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৮২ শতাংশ। তিন অংশে বিভক্ত হয়ে এ প্রকল্পের কাজ চলমান। ঢাকা-মাওয়া অংশে অগ্রগতি ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ। দ্বিতীয় অংশ মাওয়া-ভাঙ্গার কাজের অগ্রগতি ৯৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। ভাঙ্গা থেকে যশোর অংশের কাজের অগ্রগতি ৭৮ শতাংশ।
প্রসঙ্গত, ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে যশোর পর্যন্ত ১৬৯ কিলোমিটার রেললাইন নির্মাণে ২০১৬ সালের ১ জানুয়ারি থেকে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন শুরু করে বাংলাদেশ রেলওয়ে। জিটুজি পদ্ধতিতে এ প্রকল্পে অর্থায়ন করছে চীন। প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত। রেল সংযোগের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। ট্রান্স এশিয়ান রেলওয়ের নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত হবে ঢাকা-যশোর পর্যন্ত পদ্মাসেতু রেল সংযোগ রুটটি।
এ রুট দিয়ে বাংলাদেশের রেলপথ ভারতের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্ত দিয়ে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে ঢাকা থেকে পদ্মাসেতু হয়ে নতুন চার জেলা (মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর ও নড়াইল) অতিক্রম করে যশোরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপিত হবে। একই সঙ্গে বিদ্যমান ভাঙ্গা-রাজবাড়ী থেকে কুষ্টিয়া হয়ে হার্ডিঞ্জ ব্রিজ দিয়ে রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের সঙ্গেও যুক্ত হবে এ রেলপথ। ফলে এসব অঞ্চলে কম খরচেই পণ্য ও যাত্রী চলাচল করতে পারবে ঢাকার সঙ্গে।
ডেস্ক রিপোর্ট
Post a Comment