সাইকেল যোগে থাই নাগরিক কে হজ পালনে যেতে বাধা দিলেন ভারতীয় ইমিগ্রেশন
সাইকেল চালিয়ে সড়ক পথে পবিত্র হজে যেতে
পারলেন না থাই নাগরিক ইসা আব্দুস সালাম (৬৪)। বেনাপোলের বিপরীতে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশ তাকে ফিরিয়ে দিয়ে বিমান পথে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। অথচ তার ভিসা ছিল ই-ভিসা। তিনি এই ভিসায় সড়ক ও বিমান পথে যেতে পারবেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেনাপোল চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ।
তিনি বলেন, সাইকেল চালিয়ে পবিত্র হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব যাওয়ার পথে থাই নাগরিক ইসা আব্দুস সালাম (পাসপোর্ট নম্বর-এসি-৪০৯৪৮০০) সাইকেল চালিয়ে ঢাকা থেকে রওয়ানা হয়ে পথিমধ্যে কয়েকটি স্থানে বিরতির পর আজ বুধবার (২৫ জানুয়ারি) সকাল সাড়ে নয়টার সময় ইমিগ্রেশন ও কাস্টমসের কাগজপত্রের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে ভারতে প্রবেশ করেন।
পরে ভারতের পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন তাকে সড়কপথে যাওয়া যাবে না বলে বিমান পথে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে পুনরায় বাংলাদেশে ফেরত পাঠিয়ে দেন। তিনি সাইকেল চালিয়ে পুনরায় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে বেনাপোল ত্যাগ করেন।
এর আগে তিনি ঢাকা থেকে সাইকেল চালিয়ে মাগুরা শহরের পারনুন্দুয়ালী বেপারি পাড়ায় গত শনিবার (২১ জানুয়ারি) মাগরিবেব নামাজ আদায় করেন। এরপর সেখান থেকে মঙ্গলবার যশোর অবস্থান করে আজ বুধবার সকালে বেনাপোলের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বেনাপোল চেকপোস্টে পৌছান।তবে তিনি থ্যাইল্যান্ড থেকে ঢাকায় আসেন উড়োজাহাজে করে। তার ইচ্ছা ছিল বাংলাদেশ থেকে ভারত হয়ে সৌদি আরবে পবিত্র হজ করতে যাবেন সাইকেল চালিয়ে। এ থাই নাগরিকের এমন পরিকল্পনা দেখে বিস্মিত হয়েছেন বেনাপোলের স্থানীয় বাসিন্দারা। তার এই মহৎ উদ্দেশ্যের জন্য সাধুবাদ জানান অনেকে। কিন্থু ভারত চেকপোস্ট থেকে ফেরত আসার পর অনেকে বিস্মিত হয়েছেন। হজ করতে যাওয়ায় এমন ঘটনা ঘটলো কি না তাও নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন।
জানা গেছে, থাইল্যান্ডের বাসিন্দা ইসা আব্দুস সালাম ( গৎ.ইড়ড়হহড়স চঁহুড়ুধর) প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক। বাড়ি থাইল্যান্ডের উত্তরাঞ্চলীয় সিয়াং রাই প্রদেশে। সেখানে সস্ত্রীক বসবাস করেন। এ দম্পতির কোনো সন্তানাদি নেই। সৌদি আরবে হজ করতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে ১৫ জানুয়ারি বাড়ি ছাড়েন তিনি। প্রথমে সিয়াং রাই থেকে বিমানে ব্যাংককে আসেন। সেখান থেকে ১৭ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছান।
আগে দুবার পবিত্র হজ পালন করলেও এবার সাইকেল চালিয়ে মক্কায় যেতে চান জানিয়ে ইছা আব্দুস সালাম বলেন, তার বাড়ি মিয়ানমার সীমান্ত এলাকায় হলেও সেখানে অস্থিতিশীলতার কারণে সরাসরি বিমানে বাংলাদেশে এসেছেন। তাঁর সাইকেলও ঢাকায় এনেছেন বিমানে। সাইকেলে গত পাঁচ দিনে মানিকগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর হয়ে শনিবার সন্ধ্যায় পৌঁছান মাগুরায়। এরপর যশোর হয়ে আজ সকালে বেনাপোল চেকপোস্টে পৌছান। বেনাপোল হয়ে তিনি প্রবেশ করতে চেয়েছিলেন ভারতে। সেখান থেকে পাকিস্তান, ইরান, কুয়েত হয়ে পৌঁছাতে চান সৌদি আরবের মক্কায়। ইছার পরিকল্পনা অনুযায়ী, দীর্ঘ এই পথ পাড়ি দিতে তাঁর সময় লাগবে ছয় মাস। কিন্থু তাকে পেট্রাপোল ইমিগ্রেশন ফেরত দিয়েছে। বলেছেন সড়ক পথে যাওয়া যাবে না। তাই ঢাকায় ফিরে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, ঢাকা থেকে যাত্রা শুরুর পর পথে বিভিন্ন জায়গায় থেমে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে ছবি তুলেছেন। বাংলাদেশিদের আতিথেয়তারও প্রশংসা করেছেন। তিনি ২৫ বছর বয়সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
ঘুরতে পছন্দ করেন জানিয়ে ইছা আবদুস সালাম বলেন, এবার সাইকেল চালিয়ে হজ পালন ও এশিয়ার এক ডজন দেশ ঘুরে দেখার পরিকল্পনা নিয়ে বের হয়েছেন।
জি এম আশরাফ
বেনাপোল, যশোর
Post a Comment