শার্শা-বেনাপোলে জোরালো ভাবে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ
বেনাপোল প্রতিনিধি :
হিন্দু সম্প্রদায়ের বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজার বাকি আর মাত্র ১৫ দিন। এটি বাঙালি হিন্দু সমাজের অন্যতম বিশেষ ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব। দূর্গা পূজাকে সামনে রেখে যশোরের শার্শা উপজেলার বিভিন্ন পূজা মন্ডপে জোরেসোরে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। কারিগররা দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন। এবছর উপজেলার ২৯টি মন্ডপে পূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে।
আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে ঢাক-ঢোল আর কাঁসার বাদ্যে শুরু হবে পূজার আনুষ্ঠানিকতা। ১ অক্টোবর পূজা শুরু হয়ে শেষ হবে ৫ অক্টোবর। পূজা উৎসবকে পরিপূর্ণ রূপ দিতে মন্দির গুলোতে চলছে ব্যাপক সাজসজ্জার প্রস্তুুতি। বেশিরভাগ মন্ডপগুলোতে প্রতিমার কাঠামো মাটির কাজ প্রায় শেষ। শুরু হয়েছে রং তুলি ও সাজসজ্জার কাজ।
ইতোমধ্যে প্রশাসনের সঙ্গে পূজা উদযাপন কমিটির মতবিনিময় সভা হয়েছে। পূজা চলাকালে কঠোর নিরাপত্তায় থাকছে পুলিশ, র্যাব, আনসার ও গ্রাম পুলিশসহ স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা।
গত কয়েকবছর করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিমা তৈরি কিছুটা কম থাকলেও এবার কাজের চাপ বেড়েছে, বেড়েছে মজুরিও। এমনটায় জানান প্রতিমা তৈরির মৃৎশিল্পীরা।
বিভিন্ন মন্দির ঘুরে প্রতিমা শিল্পীদের ব্যস্ততার চিত্র দেখা গেছে, পূজামন্ডপে কাঁদামাটি, বাঁশ, খড়, তুলি দিয়ে শৈল্পিক শ্রদ্ধায় তিল তিল করে গড়ে তোলা হচ্ছে মহামায়া দেবী দুর্গাকে। শিল্পীদের নিপুণ আঁচড়ে তৈরি হচ্ছে একেকটি প্রতিমা। অতি ভালোবাসায় তৈরি করা হচ্ছে দুর্গা, সরস্বতী, ল²ী, কার্তিক, গণেশ, অসুর ও শিবের মূর্তি।
মৃৎ শিল্পী শ্রী মাধব দাস বলেন, ‘মাটির কাজ শেষে রং তুলির আঁচড় এর কাজ চলছে। প্রতিমাগুলো মনোমুগ্ধকর ও নিখুঁতভাবে ফুটিয়ে তুলতে সর্বোচ্চ মনোযোগ দিয়ে কাজ করছি আমরা।
প্রতিমা শিল্পী রতন কুমার বলেন, প্রতিমা তৈরি করা অনেক কষ্টের। আগের মত লাভ হয় না। তারপরও করতে হয়। দুই একদিনের মধ্যেই তৈরি করা দুর্গার প্রতিমাগুলোর রং ও সাজ-সজ্জার কাজ শেষ হবে। তিনি আরো বলেন, প্রতিমা তৈরীর মজুরি প্রতিমা সাইজ ও ধরণ অনুযায়ী নির্ধারণ করা হয়।
পূজা উদযাপন পরিষদের শার্শা উপজেলা কমিটির সভাপতি শ্রী বৈদ্যনাথ দাস বলেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসবকে শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি মন্ডপের নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক দিয়ে দায়িত্ব পালন করা হবে। উপজেলার ২৯ টি পূজা মন্ডপে দূর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। সুষ্ঠ ভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও প্রতিটি মন্ডপে পুলিশ এবং আনসার সদস্যরা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া স্থানীয় লোকজন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করবে।
যশোরের নাভারন সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান বলেন, ‘শারদীয় দুর্গোৎসব নির্বিঘেœ ও উৎসবমুখর করতে দুর্গাপূজার সময় আইনশৃঙ্খলা সুষ্ঠ ও সুশৃঙ্খল রাখতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কঠোর নিরাপত্তা দিতে পুলিশের টিম মাঠে থাকবে টহলরত অবস্থায়। এ ছাড়াও উপজেলা পর্যায়ে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে মনিটরিং টিম কাজ করবে।
রাজু আহমেদ
বেনাপোল, যশোর
Post a Comment